একাই তো হেঁটেছিলাম উদ্দেশ্যহীন বিস্তৃত শেষ না হওয়া সীমাহীন কোন পথে!
ভবঘুরের ন্যায় উদ্বিগ্ন হয়ে দিক্বিদিক ছুটে চলেছিলাম অজানা ভুল পথে, কখনো একটুও অনুশোচনা আসেনি আর খুঁজেও পাইনি ভুলপথে এমন উদ্দেশ্যহীন হাঁটার আসল কোন মানে! ঠিক বেঠিকের তোয়াক্কা ছিল না, ছিল না কোন মিছে মায়ার অস্তিত্বের স্বার্থ! শুধুই বিধ্বস্ত হতে চেয়েছি কারণহীন বিশাল কারণেই!
উদ্ভট গন্তব্যহীন পথের কোন এক বিপদসংকুল মোড়ে হঠাৎ দেখা দিলি তুই সামনে এসে, মায়াময়ী আকৃতি নিয়ে।
মনের সকল জীর্ণ-শীর্ণতা দূর করিয়ে সেদিন দেখিয়েছিলি এই উদ্ভট পথে হেঁটে চলার প্রকট মূঢ়চিত্ততা। আতঙ্কভরা সেই মুহূর্তে আপাদমস্তক প্রকট বিপদগ্রস্ততার ভয়ে থরথরে যখন কাঁপতেছিল,অনুতপ্ততার বাঁধ ভাঙা সেই সময়ে কপালকুণ্ডলার মত প্রেমআশ্রয় দিয়ে উদ্ধার করেছিলি বিপদসংকুল ভয়ঙ্কর অরণ্যের পথ থেকে।
উদ্দেশ্যহীন গন্তব্যের অবসানে নিজেই সঙ্গী হয়েছিলি সেদিন সঠিক পথে যাত্রানির্দেশক হতে।তারপর অনেকটা পথ নির্ভয়ে কিছুটা প্রশান্তচিত্তে হেঁটেছিলাম তোর মায়াময়ী স্নিগ্ধা হাতটি ধরে! গভীর অরণ্যে অসমতল ঝড়-ঝাঞ্ঝাটে হিংস্র প্রাণীদের উদ্ধত আক্রমণাত্মক চেহেরা দেখেও সেদিনগুলোতে বিন্দু মাত্র ভয় পেতাম না, শুধু তুই হস্তটি শক্ত করে ধরে রেখেছিস বলে। অতি মিষ্ট প্রণয় প্রাপ্ত হয়ে ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে যখনই কিছুটা সংকোচ ভরা নয়নে তোর দিকে তাকাতাম,ভীষণ ভয়ে তোকে হারিয়ে ফেলার তিক্ত কল্পনার কিছুটা প্রকাশ করতে চাইতাম, চোখের ইশারায় পাগল বলতি, হাস্য সুরে অসম্ভবকর পাগলাটে চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জোর আকুতি করতি। ভয়ে ভীষণ কম্পিত হাস্তটিতে তোর স্নিগ্ধ হাতটি রেখে আমৃত্যু এভাবে পাশে থাকাবি বলে অঙ্গিকার করতি।
তবে কেন আজ অনেক দূরে!
কেনই বা হঠাৎ হারিয়ে গেলি গন্তব্যস্থানে না পৌঁছিয়ে! অজানা বিপদসংকুল পথে একলা পথিক করে কেনই বা গেলি সরে!
আজ আবারও উদ্দেশ্যহীন ভবঘুরে, গন্তব্যের আশা ছেড়ে ছুটে চলছি হিংস্র পথ বেয়ে।এ যাত্রায় আর কারো ছলনার সংক্ষিপ্ত মায়ায় পড়ে পিছে ফিরা নয়, নয় অস্তিত্বের চিন্তায় থমকে দাঁড়া।এ যাত্রা হলে হোক ধ্বংসের তবে কোন কপটতার বলি হওয়া নয়, নয় আত্ম বিলীনের মিথ্যে সাক্ষী হওয়া!