বাংলার আলো
'বাংলা ছড়াবে বিশ্বজুড়ে'
Featured Post
অপ্সরীর প্রেমে -কবিতা
''অপ্সরীর প্রেমে" তারেক মাহমুদ সুজন হতবম্ভে মারে মোরে দেখে তোর কোমালতা অদৃশ্যেও খুঁজে পাই নি কবু এমন দারুণ মায়া। স...

Tuesday, June 20, 2017
"দুশ্চরিত্রতার গ্রাসে সন্তান " গল্পঃ তারেক মাহমুদ সুজন
সেই নয় বছর বয়সে ইরিকাকে লন্ডনে নিয়ে যায় তার ফুপি। ইরিকা তখন ক্লাস টুয়ে পড়তো । আজ সে অনেক বড় হয়ে গেছে, উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে কিশোরী থেকে যুবতীর দলে নাম বসিয়েছে। ফুপির মায়া আর যত্নের কবলে থাকাতে মা বাবাকে ছেড়ে খুব একটা কষ্টে থাকতে হয়নি তাকে। তবে মা বাবাকে খুব একটা যে মিস করতো না তা কিন্তু না। দূরে থাকাতে মা বাবার প্রতি অনেক গভীর মায়া জন্মে গেছিলো ইরিকার । তাই একটু সময় পেলেই পাপা মাম্মি করতে থাকতো, কল দিয়ে মা বাবার সাথে ঘণ্টা অন্তর ঘণ্টা কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো। অনেক অনুভব করতো মা বাবার দূরত্বকে। আর তাই উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেই ফুপিকে বুঝিয়ে মা বাবার সাথে দেখা করতে দেশে চলে এসেছে ইরিকা। মনে মনে চিন্তা করতেছে মা বাবাকে ছেড়ে আর যাবেই না মা-বাবাহীন ভিন্দেশে।তাই শহরের নামকরা প্রথম সারির একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে যায় ইরিকা। ইরিকা তার মা বাবার এখন পর্যন্ত একমাত্র সন্তান। বয়সটা সবে মাত্রে আঠারো পার হয়ে উনিশে এসে পথ শুরু করেছে। আর দেখতে একদম পুতুলের মত লাগে ইরিকাকে, বাচ্চা স্বভাবের মেয়েটি যেমন সুন্দর তেমন কোমল অনুভূতি সম্পন্না । তার মা বাবার বয়সও তেমন একটা হয়নি। তাদেরকে দেখলে কেউ বুঝতেই পারবে না তারা যে এত বড় এক কণ্যা সন্তানের জনক জননী। বাবাকে দেখতে একটু বয়স্ক মনে হলেও নিজ মাকে দেখতে মনে হয় পাঁচ-ছয় বছরের বড় নিজ বোনের মত। তাই দেশে এসে মায়ের সাথে তার বন্ধুর মতই সখ্যতা তৈরী হয়ে গেছে। ইরিকা তার জীবনে যত ঘটনা অঘটা আছে সব কিছুই মায়ের সাথে বন্ধুর মত ভাগাভাগি করতে ভালোবাসে। মাও মেয়েকে বন্ধু হিসেবো মেনে নিছে, মা-মেয়ে আড্ডা তামশায় খুব ভালোই সময় কাটাচ্ছে ইরিকা। এক্ষেত্রে বাবাও পিছিয়ে নেই, মেয়েকে অনেক আদর করে। রাতে এসে মেয়েকে ঘুম থেকে উঠিয়ে নিজ হাতে খাইয়ে দেয়। ইরিকাও বাবার হাতে খাওয়া ছাড়া খায় না। একদম নাছরবান্দা, মায়ে অনেক বকে এত বাপ আদুরী মেয়ে হওয়ায়। এভাবেই দেশে এসে মা বাবার আদর, যত্ন, ভালেবাসা দেখে বিষণভাবে মুগ্ধিত কমলমতি ইরিকা। মা বাবার প্রতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাগ অভিমানে খুবই ভালো সময় পার করছে সে। ভিতরের কোমলতা আর বাচ্চামিটাও চলছে সমান গতিতে। প্রায়ই ভাবে এমন সুখের স্বর্গ ছেড়ে শুধু শুধু জীবনের দশটি বছর কাটিয়েছি বিদেশে। কিন্তু সেই কোমল নিষ্পাপ মনের মেয়েটির সুখ-আহ্লাদ তার নিজ মা বাবার কাছেই সহ্য হয়ে উঠেনি। ধীরে ধীরে তারাই নিজ জন্ম দেয়া পুতুলের ন্যায় মেয়েটির সুখের পথে বাধা হতে তিল পরিমাণ কুণ্ঠাবোধ করেনি।
ইরিকা আজ তার বন্ধুদের সাথে রাতে একটা পার্টিতে যাবে বলে সকাল থেকেই আহ্লাদিত। বাবাকে না পেয়ে মাকে বলে চলে যায় বন্ধুদের সাথে। শহরের নামকরা কোন নাইট ক্লাবে এটাই ইরিকার প্রথম আসা । ক্লাবটি তিনটি ভাগে বিভক্ত, নিচ তলাটি কম বয়সী তরুণ-তরুণীদের জন্য, বসার টেবিল আর গান- নাচার মঞ্চ দিয়ে সজ্জিত। তার উপরের তলাটি মধ্যবয়সী বা বিবাহিতদের জন্যে সংরক্ষিত যারা এখানে কিছু মদ্য জাতীয় পানি প্রাণ করে মাতাল অবস্থায় গান নাচ করে থাকে। আর তারও উপরের তলাটি কারো রাত কাটানোর সুব্যবস্থায় অতি সুন্দর করে তৈরী খোপ খোপ রুম। কৌতূহলপ্রিয় কিছু বন্ধুরা ইরিকাকে নিয়ে নিচ তলা থেকে উপরের ধাপ গুলো দেখতে যায়। দ্বিতীয় তলায় গেলে একপর্যায়ে নাদিয়া ইরিকাকে বলে কিরে ইরিকা, তোর বাবা-মা এখানে! বললি না তো ওনারাও যে আসছে! ইরিকা বিস্মিত হয়ে বলে উঠলো আমার বাবা-মা?
কোথায় দেখলি তুই? তার পর নাদিয়া আঙ্গুল দিয়ে একটু দূরে দেখিয়ে বলে উনি তোর আব্বু নয়? ভার্সিটিতে প্রায়ই তো দেখি উনি তোকে গাড়িতে করে আসা নেওয়া করে। ইরিকা প্রথমে দেখে নিজের চোখকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। পরে দেখে তারই বাবা নিজ বয়সী অন্য মেয়ের সাথে মৃদু মাতাল অবস্থায় নাচ্চে। বন্ধুরা সবাই বলে কিরে তোর মা বাবাও আসছে, বললি না কেন? ইরিকা কাঁদো কাঁদো গলায় বলে উঠলো শুধু আমার বাবা এসেছে, মা নয়। মহিলাটাকে আমিও চিনি না, সবাই অভাক আর হতবম্ভিত হয়ে পড়ল আর কেমন যেন ঘৃণিত চোখে ইরিকার দিকে তাকিয়ে এটা সেটা জিঙ্গেস করতে শুরু করলো।
বন্ধুদের আর কোন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে দুনিয়ার সকল লজ্জার ভার কাধে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বাড়িতে এলো ইরিকা। এসে চিৎকার করে আম্মি আম্মি করতে লাগলো কিন্তু আম্মিও বাসায় নেই। বাড়ির কাজের মহিলাটা এসে জানায় ইরিকা তুমি যখন ঘুমিয়ে পড়ো তোমার মা প্রতিদিনই তখন বাহিরে চলে যায়। আজও গেছে এখনও আসেনি। ইরিকা প্রথম বুঝতেই পারেনি তার স্বর্গতুল্য মা কোথায় গেছে। বিষণ্ন মনে ইরিকা বাসার ছাদে বসে আছে আর নিজ বাবার কৃত নির্লজ্জতার দৃশ্য তার চোখে ভেসে বেড়াচ্ছে।
রাত প্রায় তিতটা চল্লিশ মিনিট একটু পরই ফজরের আজান কানে পৌঁছবে এমন সময় ছাদ থেকে দেখে বাড়ির সামনে একটা গাড়ি দাঁড়ালো। ইরিকা ভাবছে হয়ত তার কলঙ্কচিহ্নিত বাবা এসেছে। কিন্তু পরে তাকিয়ে দেখে একটা মধ্যবয়সী অচেনা পুরুষ তার মাতাল মাকে তার নিজ কাধে হাত তুলে ধরে ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে গেট পর্যন্ত পৌঁছে দিলো। নিজ চোখে পৃথিবীর সব চেয়ে পবিত্র ভাবা নিজ মা বাবার এমন চরিত্রহীন নষ্টামি দেখে ইরিকার চোখ দিয়ে নির্বাক আশ্রুর স্রোত অজোরে ঝরে পড়তে লাগলো। শান্ত আকাশটা আজ এতই বিষক্ত হয়ে উঠেছে যে তার বিন্দু মাত্র নিশ্বাস নিতে মন চাচ্ছে না ইরিকার। একটা সন্তানের কাছে পৃথিবীর সব চেয়ে ঘৃণিত মুহূর্ত হলো তার নিজ জন্ম দেয়া মা বাবার দুশ্চরিত্রের দৃশ্য নিজ চোখে দেখা।
ইরিকা কি করবে বুঝতে পারছে না অনেক ভাবার পর ফুপির কথা মনে পড়লো, ফুপিকে কল দিয়ে চিৎকার করে কাঁদতে শুরু করলো ইরিকা। ফুপি কিছুতেই তার কাঁদা থামাতে পারছে না, মনে হচ্ছে হৃদয় ভেঙে কাঁদার শব্দ বের হচ্ছে। নিশ্চুপ আকাশটাও আরো চুপ হয়ে গেছে। মৃদু এই স্নিগ্ধ বাতাসের প্রতিটা কণা যেন এই পুতুল ন্যায় নিষ্পাপ মেয়ের বুক ফাটা আর্তনাদের সাক্ষী হয়ে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে। তারপর আর্দ্র কণ্ঠে ফুপিকে সব খুলে বললে ফুপি বলে, দশ বছর আগেও তোর মা বাবা এমনই ছিলো,তোকে অনাদর অবেহেলায় রেখে তারা এখানে সেখানে চলে যেত। প্রায়ই তোকে নিয়ে তাদের মধ্যে তুমুল বিভেদ বাঁধতো । এইজন বলতো তোমার মেয়ে তুমি সামলাও সেইজন বলতো না, তোমার মেয়ে তুমি সামলাবা। নিজ মেয়ের প্রতি এমন নিঃস্পৃহ পশুসুলভ আচরণ দেখে আমি সহ্য করতে না পেরে তোকে নিয়ে এসেছি।
নিজ মেয়ে সন্তান নেই বলে নিজ মেয়ের মতোই তোকে আদর যত্নে বড় করেছি, কখনও মা বাবার অভাব বুঝতে দেই নাই। ভেবেছি সারা জীবন আমার কাছেই রেখে দিবো কিন্তু তুই নিজের নাড়ির টানটাকেই বড় করে দেখে চলে গিয়েছিলি। ফুপি বলে, জানিছ তুই একদির তোর মাকে কল দিয়ে কত আদরমিশ্রিত লজ্জা ভাব নিয়ে বাচ্চা মেয়ের মত বলতে লাগলি, আম্মি আমার একটা ছোট্ট ভাই বা বোন লাগবে, যেন দেশে এসে সারাদিন তার সাথে দুষ্টামি করতে পারি। কথাটা শুনে আমার চোখের কোণে অশ্রু জমে গিয়েছিলো সেদিন,যে মা বাবা তার একমাত্র সন্তাকেই এভাবে দূরে রেখে নিজ নিজ উল্লাসে জীবন কাটাচ্ছে সে মা বাবার বিবেকে মেয়ের এমন মায়াময়ী আবদার ঠেকার ন্যূনতম স্থান হয় না চিন্তা করে।
ফুপির কথা শুনে ইরিকার আকাশটা আরো বিষাদে চেয়ে গেলো। সকাল হয়ে গেলো, ইরিকা সারা রাত নির্ঘুমা চোখে একটু পানির ছিটা দিয়ে একটা চিঠি লেখতে বসলো।
চিঠিটা ছিলো,
"হয়ত আমাকে জন্ম দেয়ার কোন ইচ্ছাই তোমাদের ছিলো না, হয়ত তোমাদের একটু ভুলের কারনেই ভুলের ফসল হয়ে এই পৃথিবীতে আমার আসা। তবে জানো, সৃষ্টিকর্তা যদি আমাকে তিলার্ধ ক্ষমতা দিতো আমি কোন দিনমজুরের মেয়ে হয়ে এই সুন্দর পৃথিবীতে আসতে চাইতাম,তোমাদের অপবিত্রতার সাক্ষী হয়ে সমাজে কলঙ্কের মুখ দেখাতে আসতাম না।
তোমাদের এই ঐশ্বর্য, ধন-সম্পদ, গাড়ি বাড়ির দেয়ালে যে নির্মম,দুশ্চরিত্রের চিত্র ভেসে উঠে তা আমাকে তোমাদেরকে মা বাবা হিসেবে মানতে আকাশচুম্বী লজ্জা দেয়। দুঃখিত, তোমাদের এই পাপময় অসামাজিক দুশ্চরিত্রের জগতে মেয়ে হয়ে আর থাকতে ইচ্ছা নেই বলে। চলে গেলাম বাবা, চলে গেলাম মা। হয়ত পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে ক্লান্তির শেষ ঘুমটি ঘুমাচ্ছো আর তাই আমার শেষ যাওয়াতেও বাধা দিতে পারবে না।"
লিখার সময় পুরো চিঠিটাতেই ইরিকার চোখের পানি ঝরে ঝরে শুষ্ক কাগজ ভিজে কোমল আর্দ্র হয়ে গেলো।
অতঃপর চিঠিটা নিজ টেবিলে রেখে তার সাথে বাবার দেয়া দামি মোবাইলটি ও মায়ের দেয়া সকল স্বর্ণ অলংকার রেখে সজল চোখ আর লজ্জাভরা দেহ মন নিয়ে শেষ বারের মত বাসা থেকে বের হয়ে গেলো পুতুল মেয়ে ইরিকা। (সমাপ্ত)
Sunday, June 18, 2017
"সময়ের মিথ্যে মায়ায় আত্মবিলীন" তারেক মাহমুদ সুজন
কোন এক জোৎসা রজনীর অন্তিম লগ্নে,ভোরের নিশ্চল কাক ডেকে উঠার কিছুটা পূর্বক্ষণে রঙিন সজ্জায় সজ্জিত এক অপরিচিতা আমার রুদ্ধ দ্বারে এসে কড়া নেড়েছিল।
মৃদু আলোতে তার এলোচুলে বাধাহীনভাবেই ফুটে উঠেছিল এক আশ্চর্য ধরণের নিষিদ্ধ আভা,চোখে তার রক্তিম ছায়া। রক্তাভ রাঙা চোখের অস্পষ্ট চাহনি দেখে ভয়ে প্রথমে ভীষণ ত্রস্ত হয়ে উঠেছি। বার বার বলেছি বোধ করি আপনাকে আমি এই জন্মে স্বপ্নেও কখনো দেখিনি, চিনিও না, তবে কেন এত গভীর রাতে এই অপরিচিতের দ্বারে! কেনই বা তবে এমন উন্মাদিনীর বেশে বার বার ঢুকার তীব্র আকুতি জানাচ্ছেন আমার এই নিস্তব্ধ নির্জন ঘরে।
নিরুত্তরে সে রাঙা লোচনে অনর্গল ক্রন্দনের পানি ছাড়তে লাগল।লালচে চোখের লাল বৃত্ত সমেত অশ্রু দেখে নিজেই ভুলে গিয়েছি নিজ গগনচুম্বী সংযমিতার কথা। দ্বার খুলে দিয়েছি যৌবনের আগুল মাখা আবেগের বশে।অনিচ্ছুক হয়েও সেই রাত তার রক্তিম চোখের তৃষ্ণা মিটিয়েছি, কেবল তার পীড়াপীড়ি আবদারে ছলে। অবিশ্বাস্য হিংস্র পৈশাচিক হয়ে উঠেছি তার রক্তমাখা চোখের রক্তভাব দূর করতে।আত্ম পুরুষত্বের বড়াই আর আজন্মকাল থেকে ধরে রাখা গর্বের আসনটি ভেঙে বিচূর্ণ করে দিয়েছি বিনা চুক্তিতে।নিজের শত বছরের লালিত বোধ আর বিশ্বাসকেও উপেক্ষা করেছি সে রাত, বিলিয়ে দিয়েছি প্রকট মূঢ়চিত্তে নিজ যৌবনের সকল নির্জাস।
অতঃপর নিস্তেজ দেহের ক্লান্তির ঘুম ভাঙার পর এদিকওদিক দিশেহারার ন্যায় খুঁজতে শুরু করেছি সেই আগন্তুক অপরিচিতাকে। কিন্তু কোথাও আর পাইনি তাকে।
হয়ত নিজ প্রয়াস আর চাহিদা পুরিয়ে যাওয়া মাত্রেই প্রস্থানে নেমে গেছে সে। হয়ত অন্য দ্বারের সন্ধানে ভোর হবার আগেই চলে যেতে বাধ্য হয়েছে সে। তবে আমাকে দিয়ে গেছে এক বিষভরা কাল রাত, দিয়ে গেছে আত্ম-মূঢ়তার বাস্তব প্রতিচ্ছবি, দিয়ে গেছে শত সহস্র মূল্যবান পুরুষত্ব হারানোর সমুদ্রসদৃশ জ্বালাময়ী অনুতপ্ততা।
Friday, May 19, 2017
আত্মজাগরণ-কবিতা জান্নাতুল ফেরদৌস
আত্নজাগরণ
[ ] আজ বড্ড ফাঁকা লাগে কিছু একটা নেই নেই ভাব বিগত দিনগুলো ঢেউহীন ভেসে ওঠে;যেন ছ্যাঁকা খেয়েছি। । মনে হচ্ছে স্মৃতি আওড়ায় কেউ অসাড় জীবনের খেরোখাতা; চুপটি হয়ে পড়ে থাকতে চাই । আনকোরা কেদারাটা,আগরবাতি গুলো,চৌকোণ টেবিলটাও নিঃসঙ্গ নিরুপায় খুব।।আমিও; বেরিয়ে পড়েছি আমি ।। অজানাকে জানব বলে,স্রেফ অতলে কিছু যদি পাই।। বিদায়; বিদায়,ইট-কাঠ-ছেঁড়াফাঁড়া ভাঙা জীবন।। দূরে থাক যত্তসব পার করা একঘেয়েমি আর বিষণ্ণতা।
[ ]
"পণ্ডশ্রমে মিথ্যা প্রেম"-কবিতা তারেক মাহমুদ সুজন
"পণ্ডশ্রমে মিথ্যা প্রেম"
তারেক মাহমুদ সুজন
পণ্ডশ্রমে পাওয়া অনুভূতি বৃথায় যায় যে চলে,
নিশ্চেষ্টায় পাওয়া ভালবাসা তাই তো মানে না অসীম আবদারের ক্ষুদ্র খানিক আকুতি!
স্বার্থে আসা শর্তাধীন প্রেম থাকে না টিকে,
আবেগ রাজ্য আগুল জ্বেলে;চলে যায় সে একদিন কপট হাসি হেসে!
সময়ের মায়ায় পরে ভালবাসা হয়,
প্রেম হয় না তা ভুলেও,
সময়ের কাঁটা অন্তরে গেঁথে হারিয়ে যায় এককালে;প্রেম ভালবাসার বিরাট বিভেদ বুঝিয়ে!
কপটতা আর ছলনার কপিনে শায়িত হয়ে অশ্রুসিক্ত মরণ প্রাপ্তে একদিন নিঃশেষে নামে মিথ্যে নামদারী প্রেমগুলো,
বিঁধিয়ে যায় সেইদিন হৃদয় মধ্যে বিষক্ত কণ্টকের নিদারুণ জ্বালাময়ী বিঁধ;নিজেরই অগোচরে!
Thursday, May 18, 2017
"আবারও উদ্দেশ্যহীন গন্তব্যে"-কবিতা
তারেক মাহমুদ সুজনঃ
একাই তো হেঁটেছিলাম উদ্দেশ্যহীন বিস্তৃত শেষ না হওয়া সীমাহীন কোন পথে!
ভবঘুরের ন্যায় উদ্বিগ্ন হয়ে দিক্বিদিক ছুটে চলেছিলাম অজানা ভুল পথে, কখনো একটুও অনুশোচনা আসেনি আর খুঁজেও পাইনি ভুলপথে এমন উদ্দেশ্যহীন হাঁটার আসল কোন মানে! ঠিক বেঠিকের তোয়াক্কা ছিল না, ছিল না কোন মিছে মায়ার অস্তিত্বের স্বার্থ! শুধুই বিধ্বস্ত হতে চেয়েছি কারণহীন বিশাল কারণেই!
উদ্ভট গন্তব্যহীন পথের কোন এক বিপদসংকুল মোড়ে হঠাৎ দেখা দিলি তুই সামনে এসে, মায়াময়ী আকৃতি নিয়ে।
তারপর অনেকটা পথ নির্ভয়ে কিছুটা প্রশান্তচিত্তে হেঁটেছিলাম তোর মায়াময়ী স্নিগ্ধা হাতটি ধরে! গভীর অরণ্যে অসমতল ঝড়-ঝাঞ্ঝাটে হিংস্র প্রাণীদের উদ্ধত আক্রমণাত্মক চেহেরা দেখেও সেদিনগুলোতে বিন্দু মাত্র ভয় পেতাম না, শুধু তুই হস্তটি শক্ত করে ধরে রেখেছিস বলে। অতি মিষ্ট প্রণয় প্রাপ্ত হয়ে ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে যখনই কিছুটা সংকোচ ভরা নয়নে তোর দিকে তাকাতাম,ভীষণ ভয়ে তোকে হারিয়ে ফেলার তিক্ত কল্পনার কিছুটা প্রকাশ করতে চাইতাম, চোখের ইশারায় পাগল বলতি, হাস্য সুরে অসম্ভবকর পাগলাটে চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জোর আকুতি করতি। ভয়ে ভীষণ কম্পিত হাস্তটিতে তোর স্নিগ্ধ হাতটি রেখে আমৃত্যু এভাবে পাশে থাকাবি বলে অঙ্গিকার করতি।
তবে কেন আজ অনেক দূরে!
কেনই বা হঠাৎ হারিয়ে গেলি গন্তব্যস্থানে না পৌঁছিয়ে! অজানা বিপদসংকুল পথে একলা পথিক করে কেনই বা গেলি সরে!
আজ আবারও উদ্দেশ্যহীন ভবঘুরে, গন্তব্যের আশা ছেড়ে ছুটে চলছি হিংস্র পথ বেয়ে।এ যাত্রায় আর কারো ছলনার সংক্ষিপ্ত মায়ায় পড়ে পিছে ফিরা নয়, নয় অস্তিত্বের চিন্তায় থমকে দাঁড়া।এ যাত্রা হলে হোক ধ্বংসের তবে কোন কপটতার বলি হওয়া নয়, নয় আত্ম বিলীনের মিথ্যে সাক্ষী হওয়া!
একাই তো হেঁটেছিলাম উদ্দেশ্যহীন বিস্তৃত শেষ না হওয়া সীমাহীন কোন পথে!
ভবঘুরের ন্যায় উদ্বিগ্ন হয়ে দিক্বিদিক ছুটে চলেছিলাম অজানা ভুল পথে, কখনো একটুও অনুশোচনা আসেনি আর খুঁজেও পাইনি ভুলপথে এমন উদ্দেশ্যহীন হাঁটার আসল কোন মানে! ঠিক বেঠিকের তোয়াক্কা ছিল না, ছিল না কোন মিছে মায়ার অস্তিত্বের স্বার্থ! শুধুই বিধ্বস্ত হতে চেয়েছি কারণহীন বিশাল কারণেই!
উদ্ভট গন্তব্যহীন পথের কোন এক বিপদসংকুল মোড়ে হঠাৎ দেখা দিলি তুই সামনে এসে, মায়াময়ী আকৃতি নিয়ে।
মনের সকল জীর্ণ-শীর্ণতা দূর করিয়ে সেদিন দেখিয়েছিলি এই উদ্ভট পথে হেঁটে চলার প্রকট মূঢ়চিত্ততা। আতঙ্কভরা সেই মুহূর্তে আপাদমস্তক প্রকট বিপদগ্রস্ততার ভয়ে থরথরে যখন কাঁপতেছিল,অনুতপ্ততার বাঁধ ভাঙা সেই সময়ে কপালকুণ্ডলার মত প্রেমআশ্রয় দিয়ে উদ্ধার করেছিলি বিপদসংকুল ভয়ঙ্কর অরণ্যের পথ থেকে।
উদ্দেশ্যহীন গন্তব্যের অবসানে নিজেই সঙ্গী হয়েছিলি সেদিন সঠিক পথে যাত্রানির্দেশক হতে।তারপর অনেকটা পথ নির্ভয়ে কিছুটা প্রশান্তচিত্তে হেঁটেছিলাম তোর মায়াময়ী স্নিগ্ধা হাতটি ধরে! গভীর অরণ্যে অসমতল ঝড়-ঝাঞ্ঝাটে হিংস্র প্রাণীদের উদ্ধত আক্রমণাত্মক চেহেরা দেখেও সেদিনগুলোতে বিন্দু মাত্র ভয় পেতাম না, শুধু তুই হস্তটি শক্ত করে ধরে রেখেছিস বলে। অতি মিষ্ট প্রণয় প্রাপ্ত হয়ে ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহে যখনই কিছুটা সংকোচ ভরা নয়নে তোর দিকে তাকাতাম,ভীষণ ভয়ে তোকে হারিয়ে ফেলার তিক্ত কল্পনার কিছুটা প্রকাশ করতে চাইতাম, চোখের ইশারায় পাগল বলতি, হাস্য সুরে অসম্ভবকর পাগলাটে চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার জোর আকুতি করতি। ভয়ে ভীষণ কম্পিত হাস্তটিতে তোর স্নিগ্ধ হাতটি রেখে আমৃত্যু এভাবে পাশে থাকাবি বলে অঙ্গিকার করতি।
তবে কেন আজ অনেক দূরে!
কেনই বা হঠাৎ হারিয়ে গেলি গন্তব্যস্থানে না পৌঁছিয়ে! অজানা বিপদসংকুল পথে একলা পথিক করে কেনই বা গেলি সরে!
আজ আবারও উদ্দেশ্যহীন ভবঘুরে, গন্তব্যের আশা ছেড়ে ছুটে চলছি হিংস্র পথ বেয়ে।এ যাত্রায় আর কারো ছলনার সংক্ষিপ্ত মায়ায় পড়ে পিছে ফিরা নয়, নয় অস্তিত্বের চিন্তায় থমকে দাঁড়া।এ যাত্রা হলে হোক ধ্বংসের তবে কোন কপটতার বলি হওয়া নয়, নয় আত্ম বিলীনের মিথ্যে সাক্ষী হওয়া!
Wednesday, May 17, 2017
সময়ের নিষ্ঠুর খেলা-- কবিতা
তারেক মাহমুদ সুজনঃ
কোন এক আলো-আঁধারি সন্ধায় গেয়েছিলাম তোমার রুদ্ধ দ্বারে;
মৃদু কড়া নেড়েছিলাম অনেক বার।
অনেক্ষণ পর হয়ত বিরক্ত হয়েই দরজা খুলেছিলে। আর খুললেও বা কী!তুমি তো আমাকে চিনতেই পারনি। আমি অনেক বার আত্ম পরিচয় দিয়েছি, চেয়েছি আমাকে চিনাতে কিন্তু তুমি প্রত্যাক্ষাণ করেছিলে। অথচ নিজেই কোন এক প্রখর তপ্ত দুপুরে মুগ্ধকর হাতছানি দিয়েছিলে আমায়, বলেছিলে আমার জন্য তোমার শত রুদ্ধে থাকা দ্বার সারাক্ষণই খোলা থাকবে।
তবে সেদিন সন্ধার সান্ধ্য ধোঁয়ায় নিজেই তুমি গুলিয়ে ফেলেছ আমায় আসীম সন্দেহের ভিড়ে। দিয়েছ না পাওয়ার অস্যকর যন্ত্রণা, ডুবিয়েছ বিষাদের মহাসমুদ্রের তলদেশে।
আমিও মেনে নিয়েছি নিজ মূঢ়তা, সরে এসেছি সেদিন নিজ কল্পনাকে মিথ্যে দোষী করে।ভেবে নিয়েছি আমার আসাটাই হয়ত অনেক দেরী হয়ে গেছে, এরই মধ্যেই হয়ত কেউ তোমার প্রেম সজ্জিত ঘরে প্রবেশ করে নিজের করে নিয়েছে।ভেবেছি মুছে দিয়েছে তোমার মনচিত্ত থেকে আমার সেই সকল প্রেমসিক্ত মিষ্ট স্মৃতি। কিছুটা মনক্ষুণ্যতা আর হৃদয়ক্ষয়ী ব্যাথা নিয়েই নত মস্তকে প্রস্থার করেছি সেদিন, দেইনি তোমায় বিন্দু খানিক অপবাদ।
তবে আজ! আজ আবার কেন ডাকছ আমায়,এমন করুণার সুরে! কেন বলছ শত জনম ধরে তুমি আমায় চিনো,আমাকেই খুঁজেছ এতটা কাল ধরে!
আজ কেন আমার রুদ্ধ দ্বারে শক্ত আঁট বেধেঁছ! কেন বার বার একটি বারের জন্য ঘরে ঢুকার তীব্র আহাজারি করছ!
আজ যে আর আমি নিজেই পারছি না এই অন্ধকার দম বন্ধ হয়ে আসা ঘরে তোমায় প্রবেশ করাতে।আজ যে এই ঘরটি বসবাসের বড্ড অযোগ্য হয়ে গেছে! সামান্য নিশ্বাস নেয়ারও যে বিন্দু মাত্র অক্সিজেন নেই এই বিষক্ত ঘরে।
নিস্তেজ আর প্রায় মৃতপ্রায় দেহটির শেষ ঠিকায়ায় চলে যাওয়ার প্রয়াসে আজ শুধু একটি কবর খুড়ে রাখা হয়েছে এই ঘরে। কবরটিও যে অতি আপন হয়ে গেছে, বার বার অদ্ভুত সৌন্দর্যে হাতছানি দিয়ে ডাকছে, জীর্ণ মনটাও যে সায় দিয়ে দিয়েছে অনেক আগেই। শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আজ আর একটি বারের জন্যও দ্বার খুলে তোমার আগমন দেখতে পারব না, পারব না তোমার ছটফট চিত্তে দাঁড়িয়ে থাকা দেখে মৃতপ্রায় আত্মাকে শেষবারে একটু প্রশান্তির সাগরে নিয়ে যেতে। আজ আমি সত্যিই ব্যর্থ, হয়ে পরেছি অতি নির্জীব মরা কাষ্ঠ!
Tuesday, May 16, 2017
অপ্সরীর প্রেমে -কবিতা
''অপ্সরীর প্রেমে"
তারেক মাহমুদ সুজন
হতবম্ভে মারে মোরে
দেখে তোর কোমালতা
অদৃশ্যেও খুঁজে পাই নি কবু
এমন দারুণ মায়া।
স্বপ্নে দেখেছি বহুবার
তবে বাস্তবে পারি নি মিলাতে
আজি হঠাৎ সামনে দেখে তাই
ভুলেছি নিজ আপন ভাবনাকে।
চোখের কোণে ভেসে উঠে
কী দারুণ ছায়া
মুখাবয়ে ফুটেই থাকে
কল্পনাতীত কী চরম স্নিগ্ধা আভা!
আমি হারি নি কবুও
তবে মরেছি আজি ভীষণ
দেখে অপ্সরির ন্যায় এমন মায়াময়ী স্নিগ্ধা
রূপ-স্রোতস্বিনীর আভা।
খুঁজি নি কারো কালও
তবে আজি খুঁজেছি তোকে
অতি ব্যগ্র দু'চোখে
হয়ে মহা বিভোর।
আমি বুঝি নি কবুও
চাইবো কাউকে হয়ে এমন উন্মাদ
তবে অবিশ্বাস্যেই হেরে গেলাম আজি
আজন্ম প্রেম স্থবিরতার কাছে
শুধুই তোকে ভালোবেসে।
আমি ভীষণ ছটফটে মরি
কল্পনায় শুধু তোকে নিয়েই ঘুরি
কাছে পাবার আহাজারিতে
শত নির্ঘুম রাত তীক্ষ্ণ সংশয়ে পার করি
তুই কখন এই হৃদ্য প্রণয় বুঝবি
অধীর আগ্রহে সেই সময়ের সন্ধান করি।
উৎসর্গ-আঁধার আকাশের চাঁদনি
Subscribe to:
Posts (Atom)